গত ৩ বছরে বড় হামলা হয়নি, জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণে
রোববার (৮ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘উগ্রবাদ প্রতিরোধে সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক ওয়ার্কশপে এ কথা বলেন সিটিটিসি’র প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, সারাবিশ্বে সন্ত্রাস দমনে যারা নেতৃত্ব দিয়ে থাকে তাদের দেশের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো। জিটিআই প্রতিবেদনের ভাষায় বাংলাদেশ সাউথ এশিয়ার সবচেয়ে নিরাপদ দেশ।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার মতো ভয়াবহ একটি জঙ্গি সংগঠন যে প্রস্তুতি নিয়ে তারা রি-অর্গানাইজড করার চেষ্টা করেছিল, তাদের সেই প্রস্তুতি আমরা বিনষ্ট করে দিয়েছি। শারক্বিয়ার আদলে ইমাম মাহমুদের কাফেলা নামে একটি জঙ্গি সংগঠন দেশের পাহাড়ি এলাকা প্রশিক্ষণের জন্য বেছে নিয়েছিল। সেই আস্তানা খুঁজে বের করে আমরা তা গুঁড়িয়ে দিয়েছি। আজকেও আনসার আল ইসলাম সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের দুইজন নেতাকে আমরা গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি।
ডিএমপির এই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, জঙ্গিবাদ বাংলাদেশে নতুন বিষয় নয়। বাংলাদেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আফগানফেরত মুজাহিদদের মাধ্যমে ১৯৯২ সালের ৩০ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। তখন জঙ্গিবাদের স্লোগান ছিল ‘আমরা হবো তালেবান বাংলাদেশ হবে আবগান।’ সেই সময় বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের যাত্রা শুরু হয়ে পরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে মাথাচড়া দিয়ে উঠেছিল বিভিন্ন সংগঠন।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিভিন্ন দেশের উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদ যেমন আমাদের দেশকে প্রভাবিত করে, বৈশ্বিক জঙ্গি হামলা যেমন আমাদের দেশকে প্রভাবিত করে, তেমন বাংলাদেশের কোনো ঘটনাও সারাবিশ্বের কাছে আলোচিত হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালের হোলি আর্টিজান হামলার কারণে বাংলাদেশ যে বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছিল এবং হোলি আর্টিজান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে একটি জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার যে অপপ্রচার করার পাঁয়তারা শুরু হয়েছিল, তা আমাদের সাংবাদিক ভাইদের লেখনীর কারণে হতে পারেনি। অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিকদের লেখনীর মাধ্যমে এবং সিটিসিটিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের দমনে এখন রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হয়েছে। এজন্য আমি আপনাদের (সাংবাদিক) অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই৷
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দেশের জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুরোপুরি সক্ষম হয়েছি আমরা। কারণ গত ৩ বছরে বাংলাদেশে কোনো ধরনের জঙ্গিবাদের ঘটনা ঘটেনি।
তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ নিয়ে কাজ করা সংস্থা Institute for Economics & Peace (IEP) এর গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স (জিটিআই) এর রিপোর্টে বাংলাদেশ প্রতিবছর জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে উন্নতি করছে। এবছরে বাংলাদেশের অবস্থান রয়েছে ৪৩তম। এর আগে ২০১৬ সালে আমাদের অবস্থান ছিল ২২তম।