গায়েবি’ মামলায় দ্রুত সাজা দিতে আইন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ শাখা খোলা হয়েছে, অভিযোগ বিএনপির,
গায়েবি’ মামলায় দ্রুত সাজা দিতে আইন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ শাখা খোলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আইন মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ শাখা খোলা হয়েছে, যাদের কাজ হলো বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা ও গায়েবি মামলার তালিকা করে নির্দিষ্ট কিছু মামলার দ্রুত বিচার করে সাজা দিতে আদালতকে নির্দেশ দেওয়া। এই কাজটা শুরু হয়েছে এবং গতকালই ১৫ জন নেতাকে ৪ বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনের নামে সরকার যা করছে, তা বেআইনি সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছু নয়।
সম্প্রতি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা বেড়েছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, পুলিশের পাশাপাশি ডিবি এ ব্যাপারে অধিক তৎপর। স্বাভাবিক দলীয় শান্তিপূর্ণ কর্মকাণ্ড, এমনকি গভীর রাত্রে ঘুম থেকে উঠিয়ে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে আগের কোনো গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এজাহারভুক্ত আসামি না হওয়া সত্ত্বেও জামিন দেওয়া হচ্ছে না।
বিএনপি মহাসচিব আরও অভিযোগ করেন, কারাগারে বন্দীদের ওপর নিপীড়ন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি কক্ষে দ্বিগুণ-তিন গুণ বন্দীকে গাদাগাদি করে রাখা হচ্ছে। ১৫ দিন পরও বন্দীদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজন দেখা করতে পারেন না। দর্শনার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার নিত্যই ঘটছে। খাবার অতি নিম্নমানের এবং রোগে চিকিৎসা পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। অর্থাৎ সব মিলিয়ে নেতা-কর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জীবিত দেখতে চায় না বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বিনা ভোটে জোর করে ক্ষমতা দখলকারী বর্তমান সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জীবিত দেখতে চায় না। এর অনেক প্রমাণের অন্যতম হলো প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক দেশনেত্রীকে ‘টুস করে পদ্মার পানিতে ফেলে দেওয়ার’ ইচ্ছা প্রকাশ এবং সম্প্রতি ‘৮০ বছর বয়স হয়েছে, চলেই তো যাবে, এত কান্না কাটির কী আছে’ এমন সব কথা বলা।
কোনো দেশের সরকারপ্রধান তো দূরের কথা, কোনো সভ্য, মানবিক, সুস্থ–সাধারণ নাগরিক প্রতিপক্ষ সম্পর্কে এমন সন্ত্রাসীসুলভ কথা বলতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, যে সরকার খালেদা জিয়ার মৃত্যু চায়, সেই সরকার তাঁর সুচিৎসায় অন্যায়ভাবে বাধা দেবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু দেশবাসীর কাছে সরকারের এই মনোভাব ও আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।