র্যাব এর হাতে হত্যা মামলার আসামী গ্রেফতার
র্যাব-৪ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৪ ও র্যব-১০ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল ০৯ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন বাড়ইপাড়া এলাকার চাঞ্চল্যকর হাত পা-মুখ বাঁধা বৃদ্ধা সাহেরা বেগম (৫৫) হত্যাকান্ডের প্রধান আসামী উজ্জল (৩৫)’কে ঢাকা মহানগরীর কমলাপুর হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ভিকটিম সাহেরা বেগম টাঙ্গাইলের দেলদুয়া থানার পরাইখালি গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার স্ত্রী। ভিকটিম সাহেরা দীর্ঘদিন যাবৎ গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় ভাতের হোটেলের ব্যবসার সুবাদে আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকায় একটি দুইতলা ভবনের নিচতলায় দুই রুমের একটি ফ্লাটে ভাড়া থাকতো। বিগত ০২ মাস পূর্বে ভিকটিমের সাথে গ্রেফতারকৃত আসামী উজ্জল হোসেনের পরিচয়ের এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত আসামী ভিকটিম’কে জানায় যে, সে কালিয়াকৈর একটি কোম্পানীতে চাকুরী করে। পরিচয়ের পর হতে গ্রেফতারকৃত আসামী উজ্জল ভিকটিমের হোটেলে নিয়মিত খাওয়া দাওয়া করত। এক পর্যায়ে গ্রেফতারকৃত আসামী ভিকটিমকে জানায় যে, সে উক্ত এলাকায় থাকার জন্য অনেক ভাড়া বাসা খুঁজেছে কিন্তু বাসা পাচ্ছে না। ভিকটিমের ভাড়া বাসাটি দুই রুম বিশিষ্ট হওয়ায় এবং একটি রুম সচরাচর খালি থাকায় ভিকটিম আসামী উজ্জলকে তার ভাড়াকৃত একটি রুম ভাড়া নেয়ার প্রস্তাব দিলে আসামী উজ্জল ভিকটিমের বাসার একটি রুম ভাড়া নেয় এবং উক্ত রুমে বসবাস শুরু করে।
আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে আরো জানা যায় যে, ভিকটিম এবং আসামী পাশাপাশি রুমে বসবাস করার সুবাদে তাদের মাঝে একটি ভাল সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ভিকটিম সরল বিশ্বাসে আসামী উজ্জল’কে জানায় যে, সে গাজীপুর এলাকায় ১৫,২০,০০০/- টাকা মূল্যের একটি জমি ক্রয় বাবদ নগদ ১০,০০,০০০/- টাকা বায়না করেছে। অবশিষ্ট ৫,২০,০০০/- টাকাও সংগ্রহ হয়েছে যা জমির মালিক’কে পরিশোধ করবে। আসামী সুকৌশলে ভিকটিমের নিকট হতে জানতে পারে যে, ভিকটিম জমি ক্রয়ের জন্য সংগ্রহকৃত বাকী ৫,২০,০০০/- টাকা তার নিজের কাছে জমা রেখেছে। আর্থিক অনটনে থাকা আসামী উজ্জলের মাথায় ভিকটিমের জমানো টাকা হাতিয়ে নেওয়ার লোভ সৃষ্টি হয় এবং আসামী বিভিন্ন পরিকল্পনা করতে থাকে। পরবর্তীতে গত ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ রাতে আসামী উজ্জল পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ভিকটিমের সাথে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে সু-কৌশলে ভিকটিমের হাত,পা, মুখ বেঁধে ও গলা টিপে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে ভিকটিমের নিকট গচ্ছিত থাকা ৫,২০,০০০/-টাকা নিয়ে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। পরের দিন ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ ভিকটিমের পূর্ব পরিচিত জনৈকা মোছাঃ তাসলিমা বেগম সকালে ভিকটিমের বাসায় গিয়ে দরজার বাহির হতে আটকানো দেখে ছিটকিনি খুলে কক্ষের ভিতর প্রবেশ করলে ভিকটিমের মুখ,হাত, পা বাঁধা মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে আশ পাশের লোকজন জোড় হয়ে ভিকটিমের লাশ দেখতে পায়। এলাকাবাসী বৃদ্ধার মৃত্যুর খবরটি তার ছেলে এবং মেয়েকে জানালে তার ঘটনা স্থলে আসে এবং ভিকটিমের ছেলে স্থানীয় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ে করে। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা রুজুর পর থেকে হত্যাকারী আত্মগোপন করে। উক্ত ঘটনাটি দেশের সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়াসহ এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।